শ্রী শ্রী চণ্ডী অধ্যায় ১ সারাংশ | Chandi 1st chapter saramsha in Bengali
প্রথম অধ্যায় (মধুকৈটভবধ)
ব্রহ্মার নাতি ছিলেন চৈত্র, তাঁর বংশে সুরথ নামে এক রাজা ছিলেন অত্যন্ত প্রজা বৎসল। কিন্তু এক সময় তিনি যবনের কাছে যুদ্ধে হেরে রাজধানীতে ফিরে দেখলেন, তাঁর মন্ত্রী অমাত্যরা ধনরত্ন, সৈন্য সব কিছু অধিকার করে নিয়েছে। তখন তিনি মৃগয়া করার ছলে একাকীই একটি ঘোড়ায় চড়ে গভীর অরণ্যে চলে গেলেন।
যোহোক, সেই বনে তিনি মেধস্ মুনির আশ্রমে একটু আশ্রয় পেলেন। কিন্তু সেখানে থেকেও সব সময়ই তাঁর রাজ্য, রাজধানী, ভৃত্য কর্মচারী-এদের সুখদুঃখের কথাই মনের মধ্যে জাগে। এমন সময় একদিন ঐ বনেই সমাধি নামে এক বৈশ্যের সাথে তাঁর দেখা হয়ে গেল। (Chandi 1st chapter saramsha in Bengali)
ঐ বৈশ্যকেও তাঁর স্ত্রীপুত্র প্রতারণা করে সব ধন-সম্পদ কেড়ে নিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় তিনিও বনে এসেও ঐ দুষ্টা স্ত্রী ও নিষ্ঠুর পুত্রদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের ভাবনা ভুলতে পারছেন না। দুজনে কথাবার্তা ব’লে দুজনেরই মনের অবস্থা একরকম দেখে তার কারণ সম্পর্কে জানার জন্য তাঁরা মেধস মুনির কাছে গিয়ে সমস্ত নিবেদন করলেন এবং তাঁদের মতো জ্ঞানী লোকেদের এমন মোহ ঘটার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন।
![durga_puja_1](https://bharatsastra.com/wp-content/uploads/2024/12/durga_puja_1.jpg)
মেধস্ মুনি তাঁদের প্রশ্ন শুনে বললেন যে, সমস্ত প্রাণীরই কোন না কোন বিষয়ে জ্ঞান আছে, তথাপি মহামায়ার প্রভাবে জীবগণ মোহরূপ ও মমতারূপ আবর্তে নিক্ষিপ্ত হয়। দেবী মহামায়া জ্ঞানীদেরও চিত্ত বলপূর্বক আকর্ষণ করে মোহাচ্ছন্ন করে দেন। ঋষির মুখে একথা শুনে রাজা সুরথ মহামায়ার স্বরূপ জানতে চাইলে ঋষি দেবীর বহু প্রকার লীলার মধ্যে একটি কাহিনী বলতে শুরু করলেন।
প্রলয়কালে সব জলমগ্ন হয়ে গেলে বিষ্ণু যখন অনন্ত শয্যায় শুয়ে যোগনিদ্রায় আছেন এবং ভগবান ব্রহ্মা তাঁর নাভিপদ্মে ধ্যানমগ্ন-এমন সময় মধু ও কৈটভ নামে দুটি ভয়ঙ্কর অসুর বিষ্ণুরই কান থেকে বেরিয়ে এসে ব্রহ্মাকে হত্যা করতে উদ্যত হল।
![durga puja-Pexel](https://bharatsastra.com/wp-content/uploads/2024/12/durga-puja-Pexel.jpg)
এমত অবস্থায় ব্রহ্মা আত্মরক্ষা করতে বিষ্ণুকে জাগাবার জন্য দেবী মহামায়ার স্তব শুরু করলেন। ব্রহ্মার স্তবে সন্তুষ্টা হয়ে দেবী মহামায়া বিষ্ণুকে জাগাবার জন্য বিষ্ণুর চোখ, মুখ, নাক, বুক, হাত থেকে বের হয়ে-একবারের জন্য ব্রহ্মাকে দেখা দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বিষ্ণুও জেগে উঠে মধু কৈটভকে ঐ অবস্থায় দেখেই তাদের সঙ্গে হাতাহাতি যুদ্ধ আরম্ভ করে দিলেন।
পাঁচ হাজার বছর ঐ যুদ্ধ চলছে, কিন্তু কোন মীমাংসা নাই। এবার মহামায়া তাঁর মায়ায় আচ্ছন্ন করলেন অসুরদের। সঙ্গে সঙ্গে তারা উদ্ধতভাবে বিষ্ণুকে বর চাইতে বলল। বিষ্ণুও বললেন, ‘যদি তোমরা সন্তুষ্ট হও তাহলে এই মুহূর্তে তোমরা আমারবধ্য হও, এছাড়া আমার অন্য বরের প্রয়োজন নাই।’
দেবীর মায়ায় তারা ‘তাই হোক’ বলে একটি শর্ত আরোপ করল যে, যেখানে জল নাই (যেহেতু তখন সবই জলমগ্ন ছিল) এমন জায়গায় রেখে তাদের মারতে হবে। বিষ্ণুও তা মেনে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নিজের জংঘায় তাদের ফেলে চক্র দিয়ে মাথা দুটি কেটে ফেললেন। এ রকম শরণাগতের ডাকে দেবীর নানাভাবে আবির্ভাবের কথা মেধস্ মুনি আরও বললেন।
মেধস্ মুনি মুখ থেকে দেবী দুর্গার নানাভাবে আবির্ভাবের কথা জানুন শ্রী শ্রী দেবীমাহাত্ম্য / চণ্ডীর পরবর্তী অধ্যায় গুলিতে। তাই পড়তে থাকুন জানতে থাকুন ভারত শাস্ত্র।
আমাদের এই পোস্ট টি ভাল লাগলে অন্যদেরকে শেয়ার করতে পারেন। আমরা সম্পূর্ণ ফ্রী তে হিন্দু ধর্মের মন্ত্র স্তোত্রম ব্রতকথা ইত্যাদি হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনা শেখানোর চেষ্টা করছি। আপনি খুশি হয়ে আমাদের কে কিছু অর্থনৈতিক সাহায্য করলে আমরা আপনার কাছে বাধিত থাকিব। অর্থনৈতিক সাহায্য করতে এখানে ক্লিক করুন।