দূর্বাষ্টমী ব্রত | Durbashtami Broto
দূর্বাষ্টমী ব্রতের সময় বা কাল- ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এই ব্রত করতে হয়, আর স্ত্রীলোকেরাই এই ব্রত পালন করে থাকে।
দূর্বাষ্টমী ব্রতের দ্রব্য ও বিধান – ধূপ, ধুনো, দীপ, আটটি ফল, নৈবেদ্য, হরিতকী, মিষ্টান্ন, খেজুর, নারকেল, আঙ্গুর, ডালিম, বেদানা, কমলালেবু প্রভৃতি।
এই ব্রত শেষ করে বংশবৃদ্ধি হওয়ার কামনা করতে হয়। এই ব্রত পালনের সময় ব্রাহ্মণকে পৈতে, পয়সা,হরিতকী, মিষ্টি প্রভৃতি দেওয়া অবশ্য কর্তব্য।
দূর্বাষ্টমী ব্রতকথা— এক সময়ে শ্রীকৃষ্ণ রাজা যুধিষ্ঠিরের কাছে এই ব্রতকথা বলেছিলেন। যখন সমুদ্র মন্থন করা হয়, সেই সময় স্বয়ং নারায়ণ নিজের হাত আর জানুর সাহায্যে, মন্দর পর্বতকে ধরে থেকে সমুদ্র মন্থন করিয়েছিলেন।
মন্দর পর্বতের সঙ্গে রগড়ে যাওয়ার ফলে তার দেহের লোমগুলো ঘসে ঘসে সমুদ্রের জলে পড়েছিল, আর সেইগুলো ভাসতে ভাসতে তীরে পৌঁছে দুর্বা হয়ে পৃথিবীতে জন্মেছিল।
আবার দেবতা আর অসুরেরা যখন অমৃত সংগ্রহ করার জন্যে সমুদ্র মন্থন করেন সেই সময়েও দুর্বার ওপর কয়েক ফোঁটা অমৃত পড়েছিল, তার ফলে দূর্বা দেবতাদের অতি প্রিয় আর অমর হয়েছিল।
ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমীতে খেজুর, নারকেল, আঙ্গুর, হরিতকী, ডালিম, বেদানা, কমলালেবু প্রভৃতি ফল, ধূপ, দীপ, ফুল ও গন্ধ ও নৈবেদ্য দিয়ে দুর্বার পুজো করতে হয়।
এই পুজোর মন্ত্র হিসেবে বলতে হয়, “হে দূর্বা তুমি দেব ও অসর সকলেরই প্রিয় ও পূজনীয়া। তুমি যেন, নানা দিকে ছড়িয়ে পড়ে অমর হয়ে এই পৃথিবীতে রয়েছো— তেমনি আমার সন্তানদেরও অমর করে দাও।”
বহু প্রাচীন যুগে দেবতারা, পার্বতী, রতি, সরস্বতী, গঙ্গা, দিতি, অদিতি, মন্দোদরী, চণ্ডী, দীপ্তা, মায়া, রেবর্তী, দময়ন্তী, মেনকা, রম্ভা আর ঋষিদের মেয়েরা দূর্বার পুজো করতেন।
খুব শুদ্ধ মনে ভক্তির সঙ্গে নিয়ম অনুসারে দুর্বার পুজো করে ব্রাহ্মণকে ভুজি, কাপড়, ফল ও দক্ষিণা দিতে হয়, পরে আত্মীয় কুটুম্বদের পরিতৃপ্ত করে ভোজন করিয়ে নিজে ভোজন করতে হয়।
যে স্ত্রীলোক সন্তান প্রাপ্তি বা বংশ বৃদ্ধি ও সন্তানদের দীর্ঘজীবন পাওয়ার জন্যে এই ব্রত করে, সে ইহলোকে স্বামী-পুত্র নিয়ে সুখে-শান্তিতে দিন কাটায় আর দোন্তে শ্রীবিষ্ণুর চরণ লাভ করে থাকে।
দূর্বাষ্টমী ব্রতের ফল— ভাদ্র মাসে যে দূর্বাষ্টমী ব্রত পালন করে—সংসারে তাকে কোনোদিন দুঃখ ও শোক ভোগ করতে হয় না।
আরও পড়ুন –
শ্রী কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম পড়ুন।
শ্রীকৃষ্ণের জনষ্টমী ব্রতকথা পড়ুন।
ভারতশাস্ত্র এর সমস্ত আপডেট এখন টেলিগ্রামে পেয়ে যাবেন (Join Telegram)