আলোক অমাবস্যার ব্রতকথা | Alok Amavasya Vratkatha Bengali
একদিন ঋষিবর নারদ নারায়ণকে প্রণাম করে যমালয়ে যাত্রা করলেন। যমালয়ের ভয়ঙ্কর নানাবিধ দৃশ্য অবলোকন করে তিনি অত্যন্ত ভীতমনে চিন্তা করতে লাগলেন যে. – জগতে কতরকমের পাপীরা এই তমোপূর্ণ ভয়ানক নরকে বসবাস করছে।
সৃষ্টি স্বরূপ কি এই রকমই হবে? এইসব ভাবতে ভাবতে তিনি ব্রহ্মার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে পিতা। যমালয়ে ভয়ঙ্কর নরকে পতিত পাপীরা কেমন করে এই ভয়ানক নরকবাস থেকে মুক্তি পাবে?’ পিতামহ ব্রহ্মা বললেন, ‘হে বৎস। জগতের হিতকারী শুভ আলোক অমাবস্যার ব্রত না করার ফলস্বরূপ উক্ত পাপীরা ঐরূপ অকথ্য নরক-যন্ত্রণা ভোগ করছে।’
দেবর্ষি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে পদ্মাসন! এই ব্রতে কোন দেবতাকে পুজো করতে হয়? এই ব্রতের নিয়ম কি? এই ব্রতের ফল কি দয়া করে আমাকে বলুন।’ মহামতি ব্রহ্মা বললেন, ‘হে বেদজ্ঞ নারদ! এই পুজো পাবার অধিকারী আমি (অর্থাৎ ব্রহ্মা- মতান্তরে মৃত্যু-রাজ যমের, কোন কোন পণ্ডিত এই বলে থাকেন যে, যেহেতু ত্রিজগতে সমস্ত বস্তুর স্রষ্টা ব্রহ্মা সেই হেতু তিনিই যম এবং তাঁর শাসিত রাজ্যেরও স্রষ্টা। তাই এই পুজোর অধিকারী সর্বস্রষ্টা ব্রহ্মার হওয়া উচিত)।
ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষে শুভলগ্নে ব্রতচারিণী এই ব্রত আরম্ভ করবে। প্রতি দিন সন্ধ্যায় তিলতেলে প্রদীপ জ্বালতে হয়। প্রথম দু’বছর তিলতেলে ও পরের ছ’বছর- ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালা নিয়ম। প্রথম দু’বছর লবণ খাবে না, পরের দু’বছর হবিষ্যান্ন খাবে, পরের বছরে (পঞ্চম) ফল খাবে ও ছ’বছরে (ষষ্ঠে) এই ব্রতের উদ্যাপন করবে।
ধূপ, দীপ, ফুল, নৈবেদ্য দিয়ে ভক্তিসহকারে বিষ্ণু পুজো করে বিষ্ণুভক্ত ব্রাহ্মণকে দিয়ে হোম করাতে হবে। পুজোর পরে ব্রাহ্মণকে পরিতোষ করে ভোজন করিয়ে তাকে সাধ্যমত দক্ষিণা দিতে হয়। বিধি-অনুসারে এই ব্রত যে নারী করে, সেই নারীকে এবং তার স্বামী, শ্বশুর, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, জামাই- তাঁর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কারোকেও দেহান্তে ঘোর নরকে পতিত হতে হয় না। এই ব্রতের মাহাত্ম্যগুণে ব্রত-আচরণকারিণী এবং তাঁর পরিচিত সকলেই ইহলোকে নানাবিধ সুখে কালযাপন করে দেহান্তে বিষ্ণুর পরম-পদ লাভ করে থাকে।’
আমাদের এই পোস্ট টি ভাল লাগলে অন্যদেরকে শেয়ার করতে পারেন। আমরা সম্পূর্ণ ফ্রী তে হিন্দু ধর্মের মন্ত্র স্তোত্রম ব্রতকথা ইত্যাদি হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনা শেখানোর চেষ্টা করছি। আপনি আমাদের কে কিছু অর্থনৈতিক সাহায্য করলে আমরা আপনার কাছে বাধিত থাকিব। এখানে ক্লিক করুন।