জল সংক্রান্তি ব্রত
জল সংক্রান্তির ব্রত সময় বা কাল- বৈশাখ মাসে বিষ্ণুপদী সংক্রান্তির দিন এই ব্রত পালন করার নিয়ম।
জল সংক্রান্তি ব্রতের দ্রব্য ও উদযাপন বিধি –এই ব্রত উদযাপন করার সময় একটি নতুন তামার কুন্ড, এক খানি নতুন কাপড় বা গামছায় জড়িয়ে নিতে হবে। এরপর তিনটি ডালা, একটি ভুজ্যি, পৈতে ও দক্ষিণা ব্রাহ্মণকে দান করা কর্তব্য।
জল সংক্রান্তি ব্রতের দ্রব্য ও বিধান- বৈশাখী সংক্রান্তির দিন, সকালে ভালোভাবে স্নান করে, ষোড়শ উপচারে লক্ষ্মী জনার্দনের পূজো করতে হবে ও একজন ব্রাহ্মণকে জলভরা কলসি ও একটি ভুজ্যি দান করতে হবে।
এইভাবে প্রত্যেক সংক্রান্তিতে ব্রত পালন করে বছরের শেষে উদযাপন করার সময় সোনার লক্ষ্মী মূর্তি ও জনার্দনের রুপোর মূর্তি গড়িয়ে পূজো করার বিধান।
Meyeder brotokotha
জল সংক্রান্তি ব্রতকথা- কুরু- পিতামহ ভীষ্ম যখন ইচ্ছা মৃত্যুর সময় শরশয্যায় শুয়ে ছিলেন সেই সময় রাজা যুধিষ্ঠির পিতামহ ভীষ্ম কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, মানুষ কি কাজ করলে পৃথিবীতে ধনবান, গুনবান ও জিতেন্দ্রিয় হয়ে সব ব্যাপারে জয়লাভ করতে পারে।
আর তাকে নরকে যেতে হয় না সেই বিষয় আমরা কিছু জানতে চাই। পিতামহ ভীষ্ম যুধিষ্ঠিরের ওপর খুব সন্তুষ্ট হয়ে বললেন,–তবে শোন যুধিষ্ঠির।
পুরা কালে ঋষি মন্তিবের গুণবতী নামে এক স্ত্রী ছিল। গুণবতী নানা রঙের গুঁড়ো দিয়ে তাদের কুটির খানি প্রতিদিন সাজিয়ে রাখতো আর তাতে তার স্বামী ঋষি মন্তব্য খুবই খুশি হতেন।
গুণবতী একদিন এইভাবে তাদের কুটির খানি সাজিয়ে, তার স্বামীকে বললেন ,প্রভু! কি কাজ করলে মানুষ পৃথিবীতে ঠান্ডা জল পেতে পারে, নীরোগ থাকতে পারে, আর কখনো তাকে নরকে যেতে হয় না – তা আমাকে বুঝিয়ে বলুন।
মন্তিব্য খুব সন্তুষ্ট হয়ে গুণবতীকে বললেন যে, জল সংক্রান্তি ব্রতই তোমার পক্ষে সকলের চেয়ে ভালো, আর সমস্ত ব্রতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এই ব্রত সৃষ্টি করেছেন ব্রহ্মা। আমি এই ব্রতের বিষয় তোমাকে বলছি শোনো।
প্রত্যেকেরই খুব ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই ব্রত পালন করা উচিত তার ফলে সেই ব্যক্তি অফুরন্ত ঠান্ডা জল পায় আর অনেক সুখ ভোগ করে মৃত্যুর পর বিষ্ণুপদ প্রাপ্ত হয়। গুণবতী তখন এই ব্রতের বিধান শোনাতে বললেন তার স্বামীকে।
গুণবতীর কথা শুনে ঋষির মন্তিব্য বললেন, এর নিয়ম অনুসারে সকালের স্মান করে শুদ্ধ হয়ে নারায়নের আচনা ও সংকল্প গ্রহণ করতে হবে, তারপর লক্ষী- জনার্দনের পূজা করে ভুজ্যি,
জল ভরা কলসি আর দক্ষিণা দান করে ব্রতকথা শোনা দরকার। পরে সামর্থ্য অনুসারে ব্রাহ্মণ ভোজন করানো কর্তব্য। যে স্ত্রী জল সংক্রান্তির ব্রত পালন করে- সর্বত্রই তার জয়লাভ হয়ে থাকে, আর সে পিতৃকুল ও স্বামীর কুলকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। এরপর ভীষ্ম বললেন, আর বেশি বলা বাহুল্য মাত্র যুধিষ্ঠির।
জল সংক্রান্তি ব্রতের ফল- জল সংক্রান্তির ব্রত পালন করলে নারী কোনদিনই স্বামীকে না হারিয়ে আর স্বামী সোহাগিনী হয়ে খুব সুখ শান্তিতে জীবন কাটাতে পারে।
বৈশাখ মাসের আরও অন্যান্য ব্রতকথা পড়ুন ও ব্রতের নিয়ম জানুন।
ভারতশাস্ত্র এর সমস্ত আপডেট এখন টেলিগ্রামে। এখনি যুক্ত হন আমাদের টেলিগ্রাম চ্য়ানেলে। (Join Telegram)