রাধাষ্টমী ব্রত

রাধাষ্টমী ব্রত

 

রাধাষ্টমী ব্রতের সময় বা কাল —

ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রাধাষ্টমী ব্রত নিতে হয়। (মনে রাখবেন কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী আর শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রাধাষ্টমী ব্রত।) সমস্ত স্ত্রীলোকেরা রাধাষ্টমী ব্রত করে থাকে। এছাড়া সমস্ত শ্রী রাধা ভক্তরা ও এই ব্রত নিতে পারেন।

Radhashtami Broto

রাধাষ্টমী ব্রতের দ্রব্য ও বিধান— গন্ধ ফুল, আতপচাল, সিদ্ধচাল, নৈবেদ্য, আট রকম আটটি ফল প্রভৃতি। ব্রতের আগের দিন নিরামিষ ভোজন করতে হবে এবং ব্রতের দিন উপোস করে থেকে

শ্রীরাধিকা, ললিতা, বৃন্দা আদি অষ্টসখী, বৃষভানু, নন্দ প্রভৃতির পুজো করতে হয়। ব্রতের পরের দিন ব্রাহ্মণ ও বৈষ্ণবদের ভোজন করিয়ে যথা সাধ্য ভোজন দক্ষিণা দেওয়া ব্রত পালনের নিয়ম।

রাধাষ্টমী ব্রতকথা— এক সময় সূর্যদেব শ্রীকৃষ্ণের তপস্যা করতে থাকেন। বহুদিন ধরে সূর্য এইভাবে তপস্যায় ব্যস্ত থাকার ফলে পৃথিবী একেবারে অন্ধকারে ডুবে রইল। তার ফলে, সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবার উপক্রম হল।

এই অবস্থার দরুন দেবতারা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তারা শ্রীকৃষ্ণের কাছে গিয়ে সৃষ্টি রক্ষার জন্যে এর বিহিত করতে তাকে অনুরোধ করলেন। দেবতাদের কথা শোনার পর শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বললেন “তোমরা নিশ্চিন্তে থাকো, আমি শিগগিরই এর একটা বিহিত করছি।”

তারপর শ্রীকৃষ্ণ সূর্যের কাছে গিয়ে বললেন, “তোমার তপস্যা সিদ্ধ হয়েছে, এখন তুমি বর প্রার্থন কর।” সূর্য তখন বললেন, হে বিশ্বপতি! আমাকে এই বর দিন যে—আমার যেন একটি মেয়ে হয়, আর আপনি সেই মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।”

শ্রীকৃষ্ণ বললেন, “তাই হবে দিবাকর। দ্বাপর যুগে তুমি গোকুলে বৃষভানু হয়ে গোপের মেয়ে সুকীর্তিকে বিয়ে করবে। তার গর্ভে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে একটি মেয়ে জন্মাবে।

সেই মেয়ের নাম রাখা হবে রাধিকা আর আমিও রাধিকার প্রতি আকৃষ্ট হবো। যাও, এখন অন্ধকার সরিয়ে সৃষ্টিকে রক্ষা করো।” নিজের প্রার্থনা মতো বর পেয়ে সূর্যও সন্তুষ্ট হয়ে চলে গেলেন।

ক্রমে গোকুলে বৃষভানুর বাড়িতে উঠল এক আনন্দের রোল। বৃষভানুর স্ত্রী সুকীর্তি একটি মেয়ে প্রসব করল। সকলের খুব আনন্দ হল। পরে সেই মেয়ের নাম রাখা হল রাধিকা।

ধীরে ধীরে সময় কেটে গিয়ে রাধিকার বিয়ের বয়স উপস্থিত হল, অয়ন ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে গেল। কিন্তু ভগবানের ইচ্ছা অনুসারে রাধিকা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে গোপনে বিহার করতে থাকলেন।

এর কারণ, শ্রীকৃষ্ণ আর রাধিকা একই আত্মা। রাধিকার গোপনে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে মেলামেশার দিনগুলি নানা উৎসবে পূর্ণ ছিল আর বৃন্দাবনে দোললীলা, রাসলীলা, নৌকাবিলাস ইত্যাদি নামে আনন্দের সঙ্গে পালন করা হত।

ভাদ্র মাসের রাধাষ্টমীর দিনে যদি কেউ শ্রীরাধিকার পুজো করে, তাহলে শ্রীকৃষ্ণ তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট হন, তিনি তার মনস্কামনা অবিলম্বে পূর্ণ-করেন।

শ্রীকৃষ্ণ নিজ মুখেই বলেছেন, “আমার নাম হাজার বার জপ করলে লোক যে ফল পায়—সেই ফল পাওয়া যায় মাত্র একবার রাধাকৃষ্ণ নাম জপ করলে।”

তাই তাই সকলে মিলে একবার বলুন  “জয় শ্রী রাধাকৃষ্ণ, জয় শ্রী রাধাকৃষ্ণ”

রাধাষ্টমী ব্রতের ফল – শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধাকে সন্তুষ্ট করার জন্য, স্ত্রীলোকেরা এই ব্রত নিয়ে থাকে। এই ব্রত পালন করার ফলে, সংসার শাস্তিতে পরিপূর্ণ থাকে।

শ্রী কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম পড়ুন।

শ্রীকৃষ্ণের জনষ্টমী ব্রতকথা পড়ুন। 

ভারতশাস্ত্র এর সমস্ত আপডেট এখন টেলিগ্রামে পেয়ে যাবেন (Join Telegram)

Scroll to Top
Saraswati Puja top 5 Mantra Durga puja 2023 full panchang Top 5 Chants of Maa Durga Top 5 Ganesh Mantra for Ganesh Chaturthi Radha Krishna: দেখুন শ্রী রাধা কৃষ্ণের অপূর্ব রূপ