তালনবমী ব্রত
তালনবমী ব্রতের সময় বা কাল – ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে এই ব্রত করতে হয়। সমস্ত সধবা স্ত্রীলোকেরাই এই ব্রত পালন করে থাকে।
তালনবমী ব্রতের দ্রব ও বিধান- ঘট কলসী, ধূপ, দীপ, ফুল, নৈবেদ্য, ৯টি ফল ও মিষ্টার, উদ্যাপনের সময় ব্রাহ্মণকে একখানি নতুন কাপড় ও ১টি টাকা দক্ষিণা দেওয়া প্রয়োজন। একটি পরিষ্কার জায়গায় মণ্ডপ তৈরী করে সেখানে
বেশ করে আলপনা দেওয়ার পর, তার ওপর ঘট বসিয়ে লক্ষ্মী-নারায়ণের পুজো করবে, পিঠে তৈরী করে সকালে নারায়ণের ভোগ দিতে হবে, ব্রাহ্মণ ভোজন করাতে হবে,
তারপর নিজের স্বামীকে খাইয়ে এযোত্রীলোকেরা নিজে আহার করবে। এই রঙের এই নিয়ম পালন করতে হয়। ব্রত উদযাপনের সময় ৯ বছর।
তালনবমী ব্রতকথা— দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের রুক্মিণী আর সত্যভামা নামে দুই স্ত্রী ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ এঁদের মধ্যে রুক্মিণীকেই একটু বেশী ভালবাসতেন।
এতে সত্যভামার মনে কোন সুখ ছিল না। মনে খুব কষ্ট হওয়ার ফলে, সত্যভামা একদিন তপোবনে গিয়ে একজন তপস্বীকে নিজের দুঃখের কথা জানালেন এবং কী করে তার এই মনোকষ্টের লাঘব হবে তার উপায় বলে দিতে অনুরোধ করলেন।
সাধক তপস্বী বললেন, “দ্যাখো মা, একটি ব্রত ঠিক ঠিক ভাবে করতে পারলে, তোমার মনে আর কোনো দুঃখ-কষ্টই থাকবে না।”
সত্যভামা তখন বললেন, “আপনি আমাকে সেই ব্রতের নিয়ম বলে দিন। আমি সেই ব্রত নিশ্চয় পালন করব।” তপস্বী বললেন, “ব্রতটির নাম তালনবমী ব্রত।
ভাদ্র মাসে শুরুপক্ষের নবমী তিথিতে খুব নিষ্ঠার সঙ্গে লক্ষ্মী-নারায়ণের পুজো করবে। ব্রতটি তালনবমী ব্রত বলে এই ব্রতে তাল ফল দান করা বিশেষ প্রয়োজন।
এই ব্রত পালনের অঙ্গ হিসেবে সধবা স্ত্রীলোকেরা প্রথমে নিজের স্বামীকে খুব যত্নের সঙ্গে পিঠে তৈরী করে খাওয়াবে, পরে ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে সব শেষে নিজেরাও খাবে।
ন’বছর ঠিক নিয়মে আর নিষ্ঠার সঙ্গে এই ব্রত পালন করে উদ্যাপন করলে ছেলে-নাতি-নাতনী ও প্রচুর ধন-সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়ে থাকে সৌভাগ্যেরা আর শেষ থাকে না।
তপস্বীর কাছে সব শুনে সত্যভামা বাড়িতে ফিরে এসে তপস্বীর কথামতো ন’বছরধরে তাল নবমীর ব্রত পালন করলেন।
তাঁর ব্রত উদযাপন হওয়ার সময় নারায়ণ তার কাছে এলেন ও বললেন, “এতদিনে তোমার দুর্ভাগ্যের দিন শেষ হল। আমি বর দিচ্ছি। তুমি সৌভাগ্যবতী হয়ে খুব সুখে শান্তিতে দিন কাটাবে।”
সেই থেকে সত্যভামার মনে আর কোনো দুঃখ রইল না, শ্রীকৃষ্ণের প্রেম-ভালবাসা পেয়ে তিনি দিন কাটাতে লাগলেন।
তালনবমী ব্রতের ফল – ভাদ্র মাসে এয়োস্ত্রীরা এই তালনবমী ব্রত করলে তাদের কোন দুঃখ-কষ্ট থাকে না এবং তারা স্বামী সোহাগিনী হয়ে থাকে।
শ্রী কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম পড়ুন।
শ্রীকৃষ্ণের জনষ্টমী ব্রতকথা পড়ুন।
ভারতশাস্ত্র এর সমস্ত আপডেট এখন টেলিগ্রামে পেয়ে যাবেন (Join Telegram)