ভৈমী একাদশী ব্রত | Bhaimi Ekadashi Vrat in Bengali
ভৈমী একাদশী ব্রতের সময় বা কাল- মাঘ মাসের শুক্লা একাদশীর দিন ভৈমী একাদশী ব্রত পালন করতে হয়। এই ব্রত সকলেই করতে পারে।
ভৈমী একাদশী ব্রতের দ্রব্য ও বিধান – এই ব্রতে একটি সোনার বরাহদেবের মূর্তি তৈরী করিয়ে সাদা কাপড়ে ঢেকে তামার টাটে রেখে পুজো করার নিয়ম। এই পূজোর সময় উপোস করে থাকতে হয় এবং নানা দেব ও দেবীর স্তব-স্তোত্র পাঠ করতে হয়। পরের দিন ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে পারণ করে সোনার মূর্তিটি ব্রাহ্মণকে দান করতে হবে।
ভৈমী একাদশী ব্রতকথা – মাঘ মাসের শুক্লা একাদশীর দিন পাণ্ডবদের মা কুম্ভীদেবী উপোস করেছিলেন। একে মাঘ মাস তার ওপর শুক্লা একাদশীর দিন, তাই সেদিন খুব শীত পড়েছিল। কুন্তীদেব ভাবছিলেন কেমন করে স্নান সেরে ভৈমী একাদশী পালন করবে।
যাই হোক, তিনি কোনো রকমে স্নান সেরে কাঁপতে কাঁপতে বাড়ি ফিরছিলেন, এমন সময় পথে ভীমের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়ে গেল। মাকে শীতে এই রকম ভাবে কাঁপতে দেখে শীতের ওপর ভীমের ভয়ানক রাগ হল। ভীম তখুনি একটা লোহার ফাল লাল করে পুড়িয়ে শ্রীকৃষ্ণের নাম করে জলে ডুবিয়ে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে শীতও পালিয়ে গেল। ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভীমের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করলেন এবং কুম্ভীদেবীও শীতের হাত থেকে রক্ষা পেলেন।
এদিকে হল আর এক বিপদ। জলদেবতা বরুণ আগুনের তাপে ছট্ফট্ করতে লাগলেন। তিনি শ্রীকৃষ্ণের কাছে গিয়ে বললেন, “প্রভু! আমি জ্বলে পুড়ে মরলুম, আমাকে রক্ষা করুন।” শ্রীকৃষ্ণ বরুণদেবকে খুবই কাতর দেখে দুঃখিত হয়ে বললেন, “এর একটা উপায় আছে সেটা করলেই তুমি রক্ষা পাবে। ভীম যদি আজ একাদশীর ব্রত পালন করে, তাহলে তোমার এই আগুনে পোড়ার জ্বালা সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে। তুমি যাও, আমি এখুনি ভীমকে বলে একাদশী ব্রত করাচ্ছি।” বরুণদেব আশ্বস্ত হয়েচলে গেলেন।
তারপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আজ্ঞায় ভীম উপোস করে থেকে একাদশীর ব্রত পালন করলেন। অমনি বরুণদেবও আগুনের জ্বালা থেকে মুক্তি পেলেন। সেই থেকে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম হল ভৈমী একাদশী।
ভৈমী একাদশী ব্রতের ফল – ভৈমী একাদশী ব্রত পালন করার ফলে ব্রাহ্মণ হত্যা, চুরিচামারী, সুরাপান করার জন্য যে সকল পাপ হয়, তা সমস্তই কেটে যায়।
আমাদের এই পোস্ট টি ভাল লাগলে অন্যদেরকে শেয়ার করতে পারেন। আমরা সম্পূর্ণ ফ্রী তে হিন্দু ধর্মের মন্ত্র স্তোত্রম ব্রতকথা ইত্যাদি হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনা শেখানোর চেষ্টা করছি। আপনি আমাদের কে কিছু অর্থনৈতিক সাহায্য করলে আমরা আপনার কাছে বাধিত থাকিব। এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন – কুলুই মঙ্গলচণ্ডী ব্রতকথা